সালেহ্ বিপ্লব, হাবিব সোহেল: [৩] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার রেল যোগাযোগের মাধ্যমে সমগ্র দেশকে কক্সবাজারের সঙ্গে যুক্ত করবে। পাশাপাশি রেল পরিষেবা, গতি ও পরিবহনকে বিশ্বমানের করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

[৪] প্রধানমন্ত্রী শনিবার কক্সবাজারে আইকনিক কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশন এবং দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। 

[৫] মজার সুরে তিনি আরও বলেন, কেনো গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়াকে ছেড়ে দেওয়া হবে? তার মানে সারা বাংলাদেশ কক্সবাজারের সঙ্গে যুক্ত হবে।

[৬] প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলা থেকেই স্থানীয় একটি দাবি শুনে এসেছি। চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন ছিলো। কাজেই এই দোহাজারী থেকে কক্সবাজার কবে রেললাইন আসবে? আজকে এটা করতে পারায় আমি খুবই আনন্দিত। এটা রামু পর্যন্ত করা হয়েছে এবং গুমধুম পর্যন্ত করার কথা। এ জন্য আমরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মাধ্যমে আসতে চাই। ট্রান্সএশিয়ান রেলওয়ের সাথে আমরা সংযুক্ত হতে চাই। সেটা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

[৭] প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রেললাইনটা চকোরিয়া থেকে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর ও পাওয়ার পাøান্ট এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের সাথে যাতে সংযুক্ত হয় তার ব্যবস্থাও আমরা করে দেব। যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য আরো উন্নত হয়।

[৮] তিনি বলেন, আগামী ৩/৪ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সক্ষমতা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাতে উন্নীত হয় সেই পদক্ষেপই আমরা নিয়েছি এবং সেটা আমরা বাস্তবায়ন করবো।

[৯] এ সময় এত উন্নয়নের পরও যারা উন্নয়ন দেখে না সেসব চোখ থাকতে অন্ধদের তার সরকারের করে দেওয়া আধুনিক জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনষ্টিটিউটে ১০ টাকার টিকিট কিনে চোখের চিকিৎসা করাবার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

[১০] তিনি বলেন, আসলে এটা তাদের চোখের দোষ নয়, মনের দোষ। আজকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা, বাসে, রেলে আগুন দেওয়া হচ্ছে। আমরা রেলের জন্য যেসব নতুন লোকামোটিভ এনেছিলাম সেগুলোও আগুন দিয়ে তারা পুড়িয়েছে। যারা এত বীভৎস কাজ করতে পারে এই দুর্বৃত্তপরায়ণতায় যারা জড়িত তাদের চোখ নয় আসলে মনই অন্ধকার। কাজেই এদের ব্যাপারে সকলকে সাবধান থাকতে হবে। মানুষকে পুড়িয়ে মারবে এটা সহ্য করা যায় না।

[১১] রেললাইন উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী নিজেই টিকিট কেটে কক্সবাজার থেকে রামু যাওয়ার ট্রেনে চড়েন। তিনি হুইসেল বাজিয়ে ও সবুজ পতাকা নেড়ে ট্রেন চালানোর সংকেত দেন। 

[১২] ট্রেনে সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে প্রতিটি মেগা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। দেশ ও জনগণের উন্নয়নই তার একমাত্র লক্ষ্য। সারাদেশে রেল ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশের পর্যটন শিল্পকে আরো বিকশিত করার পরিকল্পনাও তার সরকারের রয়েছে। 

[১৩] অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর।

[১৪] এ সময় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: ইকবাল খান